ভারতীয় পণ্যে ট্রাম্পের ৫০% শুল্কের ঘোষণা রাশিয়া-ভারত কৌশলগত অংশীদারিত্বকে ঘনিষ্ঠ করেছে। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন আসছেন দিল্লিতে, আলোচনা হচ্ছে রুশ তেল ও প্রতিরক্ষা নিয়ে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘোষিত নতুন শুল্ক নীতির পরিপ্রেক্ষিতে রাশিয়া ও ভারতের মধ্যে কৌশলগত অংশীদারিত্ব আরও গভীর হচ্ছে। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের নয়াদিল্লি সফরও এই ঘনিষ্ঠতারই প্রতিফলন। বৃহস্পতিবার মস্কোতে অনুষ্ঠিত দ্বিপাক্ষিক নিরাপত্তা সংলাপে দুই দেশই ‘‘কৌশলগত অংশীদারত্ব’’ বজায় রাখার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছে। ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল ও রাশিয়ার নিরাপত্তা পরিষদের সেক্রেটারি সের্গেই শোইগুর বৈঠকে এই অঙ্গীকার গৃহীত হয়।
ট্রাম্পের শুল্কে ভারতের ওপর চাপ
রাশিয়ার কাছ থেকে অপরিশোধিত তেল আমদানির কারণে ভারতীয় পণ্যে ২৫ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প, যা কার্যকর হবে ২৮ আগস্ট থেকে। ফলে যুক্তরাষ্ট্রে ভারতীয় পণ্যের মোট শুল্ক দাঁড়াবে ৫০ শতাংশে। এই সিদ্ধান্তকে যুক্তরাষ্ট্র-ভারত সম্পর্কের জন্য একটি বড় ধাক্কা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
ক্রেমলিন ইতোমধ্যে ট্রাম্প প্রশাসনের এই পদক্ষেপকে ‘‘অবৈধ বাণিজ্যিক চাপ’’ বলে উল্লেখ করেছে এবং নয়াদিল্লির পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
রাশিয়ার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, “ভারত স্বাধীনভাবে যেকোনো দেশের সঙ্গে বাণিজ্য করার অধিকার রাখে।”
রুশ তেলে ভারতীয় নির্ভরতা ও পরিবর্তন
২০২২ সালে ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর রাশিয়ার অন্যতম বৃহৎ তেল ক্রেতা হয়ে ওঠে ভারত ও চীন।
তবে সম্প্রতি মার্কিন হুমকি ও মূল্যছাড় কমে যাওয়ায় ভারতের রাষ্ট্রীয় তেল কোম্পানিগুলো রুশ তেল কেনা বন্ধ করেছে।
তবুও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ ও নায়ারা এখনও রুশ তেলের প্রধান ক্রেতা রয়ে গেছে।
সূত্র জানায়, দোভালের সফরে রুশ তেল কেনা ও সরবরাহ পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
প্রতিরক্ষা চুক্তি ও এস-৪০০ সরবরাহ
রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের ২০১৮ সালের ৫.৫ বিলিয়ন ডলারের এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র চুক্তির বাস্তবায়নও আলোচনায় এসেছে।
যদিও সরবরাহে বারবার বিলম্ব হয়েছে, তবুও নয়াদিল্লি এই ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা চীনা হুমকি মোকাবিলায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করে।
অবশিষ্ট দুটি এস-৪০০ ইউনিট ২০২৬ ও ২০২৭ সালে সরবরাহের সম্ভাবনা রয়েছে।
গত কয়েক বছরে ভারত রুশ অস্ত্রের উপর নির্ভরতা কিছুটা কমালেও কৌশলগত প্রয়োজনে রাশিয়ার সহযোগিতা অপরিহার্য থেকে যাচ্ছে।
