চীন, ভারত, বাংলাদেশসহ মাত্র কয়েকটি এশীয় দেশে বসবাস করছে বিশ্বের প্রায় অর্ধেক মানুষ। এই জনঘনত্ব একদিকে অর্থনীতির শক্তি, অন্যদিকে পরিবেশ ও সম্পদের জন্য চ্যালেঞ্জ। এশিয়ার জনসংখ্যা বিস্ফোরণ ও টেকসই উন্নয়ন নিয়ে বিশ্লেষণমূলক প্রতিবেদন।
লিখেছেনঃ প্রফেসর আরিফ খান।
বিশ্বের জনসংখ্যা এখন ৮০০ কোটির দোরগোড়ায়। আশ্চর্যের বিষয় হলো, এর অর্ধেকেরও বেশি, প্রায় ৩৭৫ কোটি মানুষ এশীয় মাত্র সাতটি দেশে বাস করছে—চীন, ভারত, বাংলাদেশ, ইন্দোনেশিয়া, পাকিস্তান, ফিলিপাইন এবং ভিয়েতনাম। বাকি প্রায় ৪০০ কোটি মানুষ বিস্তৃতভাবে ছড়িয়ে আছে ইউরোপ, আফ্রিকা, আমেরিকা ও অস্ট্রেলিয়ার মতো বিশাল মহাদেশ জুড়ে। এই অস্বাভাবিক জনসংখ্যার ঘনত্ব কেবল মানচিত্রের পরিসংখ্যান নয়; এটি বর্তমান বিশ্বের অর্থনীতি, রাজনীতি, পরিবেশ এবং ভবিষ্যতের টেকসই উন্নয়নের কেন্দ্রবিন্দু।
এশিয়ার অর্থনৈতিক ইঞ্জিন
এই জনবহুল অঞ্চল কেবল মানুষের ভিড়েই ভরা নয়, বরং বৈশ্বিক অর্থনীতির ইঞ্জিন হিসেবেও কাজ করছে।
- চীন ও ভারত—বিশ্ব অর্থনীতির দুই দৈত্য, যাদের জিডিপি বিশ্ব প্রবৃদ্ধির একটি বড় অংশ তৈরি করে।
- বাংলাদেশ—ছোট্ট ভূখণ্ডে ১৭ কোটি মানুষ নিয়ে গড়ে তুলেছে বিশ্বমানের তৈরি পোশাক শিল্প, যা বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের অন্যতম প্রধান উৎস।
- ইন্দোনেশিয়া ও ফিলিপাইন—উদীয়মান বাজার হিসেবে তথ্যপ্রযুক্তি, সেবা খাত ও শ্রমশক্তি সরবরাহে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
এই অর্থনৈতিক শক্তি একদিকে বৈশ্বিক বাজারে নতুন সম্ভাবনা তৈরি করছে, অন্যদিকে অভ্যন্তরীণ চাহিদা ও কর্মসংস্থান বাড়াচ্ছে।
জনসংখ্যার ঘনত্ব: গর্ব নাকি দায়?
একদিকে এশিয়ার ঘনবসতি সস্তা শ্রমশক্তি, বাজার ও উৎপাদনশীলতা সরবরাহ করছে। অন্যদিকে অতিরিক্ত জনসংখ্যা দেশের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে।
বাংলাদেশ যেমন একদিকে রপ্তানি আয়ের রেকর্ড করছে, আবার অন্যদিকে পরিবেশ ও জনসংখ্যার ভারসাম্য রক্ষা করতে হিমশিম খাচ্ছে।
অতএব, এটি যেমন গর্বের, তেমনি এক বড় দায়িত্বও।
শেষকথা
এশিয়ার কয়েকটি দেশে বিশ্বের অর্ধেক মানুষ বাস করে—এটি এক বিরল বাস্তবতা। এটি যেমন শক্তি, তেমনি চ্যালেঞ্জও।
যদি এই জনশক্তিকে দক্ষতায় রূপান্তর করা যায়, তবে এশিয়া শুধু অর্থনৈতিক শক্তি নয়, পরিবেশবান্ধব উন্নয়নেরও নেতৃত্ব দিতে পারবে।
কিন্তু ব্যর্থ হলে এই ঘনবসতিপূর্ণ অঞ্চলই হবে বৈশ্বিক সঙ্কটের কেন্দ্র।
