ফজলুর রহমান ও রুমিন ফারহানার আক্রমণাত্মক বক্তব্য সত্ত্বেও শেখ হাসিনার আমলে মব রাজনীতি অনুপস্থিত ছিল। বর্তমান পরিস্থিতিতে নিরাপত্তা ও ফ্যাসিবাদ বিতর্ক নতুনভাবে প্রশ্ন তুলছে—কে ফ্যাসিস্ট?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে “ফ্যাসিবাদ” শব্দটি প্রায়শই বিতর্ক ও পাল্টা-অভিযোগে ব্যবহৃত হয়। গত কয়েকদিনে ফজলুর রহমানের বাসার সামনে ঘটে যাওয়া মব–আক্রমণের ঘটনাকে ঘিরে নতুন করে এ প্রশ্ন উঠেছে—আসলে কে ফ্যাসিস্ট? অতীতে শেখ হাসিনা, সজীব ওয়াজেদ জয় কিংবা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃত্বকে নিয়ে যেসব কটূক্তি ও আক্রমণাত্মক ভাষা ব্যবহার করা হয়েছে, সেসবের প্রেক্ষাপট পর্যালোচনা করলে চিত্রটি একেবারে ভিন্ন হয়ে ওঠে।
প্রায় তিন বছর আগে বিএনপিপন্থি আইনজীবী ফজলুর রহমান প্রকাশ্যে বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনাকে নিয়ে অশালীন মন্তব্য করেছিলেন।
শুধু তাই নয়, প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়কে নিয়েও তিনি অপমানজনক মন্তব্য করেন।
কিন্তু সেই সময় ছাত্রলীগ বা যুবলীগ তাকে ঘিরে কোনো মব তৈরি করেনি।
এমনকি তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা পর্যন্ত হয়নি।
এটি প্রমাণ করে, শেখ হাসিনার সময়ে রাজনৈতিক ভিন্নমত প্রকাশের সুযোগ তুলনামূলক উন্মুক্ত ছিল।
গত ১৫ বছর ধরে বিএনপির আলোচিত মুখ রুমিন ফারহানা টকশোগুলোতে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক ভাষা ব্যবহার করেছেন।
অনেক সময় সেই ভাষা ব্যক্তিগত আক্রমণেও গড়িয়েছে।
তবুও কোনো টকশোর পর তাকে মব দ্বারা হেনস্তা হতে হয়নি।
এখানেই শেখ হাসিনার শাসনামল ও বর্তমান পরিস্থিতির মধ্যে মৌলিক পার্থক্য খুঁজে পাওয়া যায়।
ফজলুর রহমানের সাম্প্রতিক ঘটনার পর রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনার কেন্দ্রে উঠে এসেছে মব রাজনীতি।
কেন একজন ভিন্নমতের রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকে আজ বাসার সামনে মবের মুখোমুখি হতে হচ্ছে?
অতীত ও বর্তমানের তুলনা করলে স্পষ্ট বোঝা যায়—শেখ হাসিনার আমলকে অনেকে “ফ্যাসিস্ট” বললেও, তখন অন্তত নাগরিক নিরাপত্তা ও রাজনৈতিক ভিন্নমত প্রকাশের ক্ষেত্রে এক ধরনের সুরক্ষা ছিল।
বর্তমানের বাস্তবতায় তা অনুপস্থিত।
প্রশ্ন একটাই—
ফ্যাসিবাদ কি শুধুই ক্ষমতায় থাকা দলের বিরুদ্ধে অভিযোগের শব্দ, নাকি বাস্তব অভিজ্ঞতা দিয়ে বিচার করতে হবে?
যদি শেখ হাসিনাকে “ফ্যাসিস্ট” বলা হয়, তবে স্বীকার করতেই হবে তার আমলে জনগণ ও বিরোধী রাজনীতিকেরা তুলনামূলক নিরাপদ ছিলেন।
আজকের বাস্তবতা যেন সেই বিতর্কের নতুন সংজ্ঞা হাজির করছে।
