 
                  ইউনূস সরকারের নয়া বন্দোবস্তে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশি পাসপোর্টের মর্যাদা মারাত্মক সংকটে পড়েছে। বিদেশ ভ্রমণে বাড়তি জেরা, ভিসা প্রত্যাখ্যান ও ইমিগ্রেশন বিড়ম্বনায় বাংলাদেশিরা প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হচ্ছেন।
বাংলাদেশি পাসপোর্ট একসময় দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বহু দেশে সহজ প্রবেশাধিকার পেত। তবে ইউনূস সরকারের নয়া নীতির কারণে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এর মর্যাদা ক্রমেই ক্ষয় হচ্ছে। বিদেশ ভ্রমণে ভিসা পেতে হয়রানি, বিমানবন্দরে বাড়তি জেরা, এমনকি বৈধ কাগজপত্র থাকা সত্ত্বেও ফেরত পাঠানোর মতো ঘটনা এখন নিয়মে পরিণত হয়েছে। দক্ষিণ এশিয়া থেকে শুরু করে মধ্যপ্রাচ্য, আফ্রিকা ও ইউরোপ-এশিয়ার বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশি নাগরিকরা প্রতিনিয়ত এ ধরনের বিড়ম্বনার মুখোমুখি হচ্ছেন।
শ্রীলঙ্কা, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনামসহ বহু দেশে বাংলাদেশিদের অন অ্যারাইভাল ভিসা সুবিধা প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে।
ট্রাভেল ব্লগার নাদির নিবরাসের অভিজ্ঞতা এর একটি উদাহরণ— সেশেলসে ভ্রমণের সময় রিটার্ন টিকিট না থাকায় তাকে জোরপূর্বক নতুন টিকিট কিনতে হয়।
শুধু তাই নয়, তার স্প্যানিশ বন্ধু পর্যন্ত ব্যাংক ব্যালেন্স প্রমাণ করতে বাধ্য হন।
মালয়েশিয়ায় গত ৪ মাসে প্রায় ৩ হাজার বাংলাদেশিকে বিমানবন্দর থেকে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
কারণ হিসেবে দেখানো হচ্ছে হোটেল বুকিং না থাকা, ফিরতি টিকিটের ঘাটতি, অথবা পর্যাপ্ত অর্থ প্রদর্শনে ব্যর্থতা।
একই সঙ্গে সন্ত্রাসবাদে অর্থায়ন ও উগ্রবাদের অভিযোগও যুক্ত হয়েছে বাংলাদেশিদের বিরুদ্ধে।
ঢাকায় অবস্থিত থাই দূতাবাস স্পষ্টভাবে জানিয়েছে, জাল কাগজপত্রে ভিসার জন্য আবেদন বাড়ায় বাংলাদেশিদের ভিসা বাতিলের ঘটনা নিয়মিত হচ্ছে।
মিসরে ভিসা অন অ্যারাইভাল সুবিধা শুধু নির্দিষ্ট উন্নত দেশের ভিসাধারীদের জন্য সীমাবদ্ধ করা হয়েছে।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনও স্বীকার করেছেন যে,
“আমরাই দোষী— মিথ্যা তথ্য দেওয়া, ভুল পাসপোর্ট ইস্যু করা এবং অবৈধ অভিবাসন নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হওয়ার কারণেই বিদেশে বাংলাদেশিদের মর্যাদা ক্ষুণ্ণ হচ্ছে।”
বিশেষজ্ঞদের মতে, ইউনূস সরকারের সময় থেকেই এই সমস্যা শুরু হয়।
রাজনৈতিক সুবিধার্থে মানবপাচারমুখী নীতি, বিদেশে অবৈধ অভিবাসন রোধে কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়া, এবং পাকিস্তানের সঙ্গে ভিসামুক্ত ভ্রমণ চুক্তি— সবকিছু মিলিয়ে বাংলাদেশি পাসপোর্টের প্রতি বিশ্ব সম্প্রদায়ের আস্থা নষ্ট হয়েছে।
একসময় যেসব দেশ অনায়াসে বাংলাদেশিদের ভিসা দিত, এখন তারাই কঠোর শর্ত আরোপ করছে।
এই প্রবণতা অব্যাহত থাকলে বাংলাদেশের নাগরিকদের বৈধ ভ্রমণ, শিক্ষা ও ব্যবসায়িক উদ্যোগ আরও কঠিন হয়ে উঠবে।
বাংলাদেশি পাসপোর্টের অবমূল্যায়ন কোনো আকস্মিক ঘটনা নয়, বরং দীর্ঘমেয়াদি নীতি-অসঙ্গতির ফল।
ইউনূস সরকারের সময়ে শুরু হওয়া এই প্রক্রিয়া আজ ভ্রমণ, প্রবাসজীবন ও আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
দেশের ইমেজ পুনর্গঠন ও বৈধ ভ্রমণ-অভিবাসনকে সুরক্ষিত করা ছাড়া এই সংকট থেকে উত্তরণের আর কোনো বিকল্প নেই।

 
                         
         
         
        