নাটোরে অ্যাটর্নি জেনারেলের বিএনপি সংশ্লিষ্ট পক্ষপাতমূলক আচরণে নাগরিক সমাজ তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। সাংবিধানিক পদে এমন রাজনৈতিক অপব্যবহার নিয়ে বিস্তারিত বিশ্লেষণ।
কলাম লেখকঃ জি ইসলাম
বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী অ্যাটর্নি জেনারেলের পদ একটি স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও সর্বোচ্চ মর্যাদাসম্পন্ন অবস্থান। তবে বর্তমান অ্যাটর্নি জেনারেল জনাব আসাদুজ্জামান আসাদ সম্প্রতি নাটোরের লালপুরে এমন কিছু কার্যক্রমে অংশ নিয়েছেন, যা তাঁর সাংবিধানিক দায়িত্ববোধ ও নিরপেক্ষতা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলেছে।
বিশ্বস্ত সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, ১০ জুন ২০২৫ তিনি বিএনপি ও তাদের অঙ্গসংগঠনের নেতাদের সঙ্গে নাটোরের প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তাদের একটি গোপন বৈঠকে অংশ নেন এবং প্রশাসনকে বিএনপির স্বার্থে কাজ করার ‘পরোক্ষ’ বার্তা দেন।
এই বৈঠকের পর আরও উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে, নাটোর জেলার সাতটি থানার ওসিদের সঙ্গে স্থানীয় এক বিএনপি-ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক নেতার বাসভবনে অংশ নেওয়া নৈশভোজ। যেখানে প্রশাসনের নিরপেক্ষতা ভেঙে ফেলার বার্তাই যেন প্রকাশ পায়।
🎯 শহীদ পরিবারের প্রতি অবজ্ঞা
এই সফরের সময় তিনি শহীদ পরিবার, আহত ছাত্ররা কিংবা ক্ষতিগ্রস্ত কোনো নাগরিক প্রতিনিধিদের সঙ্গে ন্যূনতম দেখা করার প্রয়োজন মনে করেননি। এই আচরণ একদিকে যেমন মানবিক বিচ্যুতি, তেমনি একটি গুরুত্বপূর্ণ সাংবিধানিক পদের মৌলিক দায়িত্ব থেকে সরে যাওয়ার নামান্তর।
⚠️ রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের গুরুতর অভিযোগ
৫ আগস্টের ঘটনার পর দেখা গেছে, দলীয় পরিচয়ের ভিত্তিতে অভিযুক্তদের খালাস দেওয়া হয়েছে। স্পর্শকাতর মামলায় তার রাজনৈতিক প্রভাব খাটানোর অভিযোগ, এমনকি ‘মামলা বাণিজ্য’-এর মতো নিন্দনীয় কর্মকাণ্ডেও তাঁর সম্পৃক্ততা উঠে এসেছে বিভিন্ন মহলের অভিযোগে।
📢 নাগরিক সমাজের প্রতিক্রিয়া
নাটোর জেলার সচেতন নাগরিক সমাজ ইতিমধ্যেই এই ঘটনাগুলোকে কেন্দ্র করে গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। তাঁরা একে রাষ্ট্রীয় দায়িত্বের চরম অবমূল্যায়ন হিসেবে দেখছেন। তাঁদের ভাষ্য— এই ধরনের পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ একজন অ্যাটর্নি জেনারেলের পদের সঙ্গে সম্পূর্ণ সাংঘর্ষিক।
🗳️ অপসারণ দাবি
সংশ্লিষ্ট নাগরিকরা সরকারের প্রতি জোরালোভাবে দাবি জানিয়েছেন, অবিলম্বে নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করে জনাব আসাদুজ্জামান আসাদকে অপসারণ করতে হবে এবং তাঁর জায়গায় একজন সত্যিকারের নিরপেক্ষ, দেশপ্রেমিক এবং গণতান্ত্রিক মানসিকতাসম্পন্ন ব্যক্তি নিয়োগ দিতে হবে।
✅ সম্পাদকীয় মন্তব্য:
রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার ভারসাম্য বজায় রাখতে হলে বিচার বিভাগের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাদের নিরপেক্ষতা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। নাটোরের সাম্প্রতিক ঘটনাবলি দেখাচ্ছে, দায়িত্বজ্ঞানহীন পক্ষপাত দেশের গণতন্ত্র ও শাসনতান্ত্রিক কাঠামোর জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে।
