নাহিদ ইসলাম বলেন “সরকার বিএনপিকে এপ্রিলের মধ্যে নির্বাচনের স্বপ্ন দেখাচ্ছে—এটা নিছক কৌশল। বিএনপিও যদি ভাবে তারা সেই নির্বাচনে যাবে, তাহলে বলি—এই খোয়াব কখনোই পূর্ণ হবে না।” সৈয়দপুরে ‘জুলাই শহীদ’ কবর জিয়ারতের পর বক্তব্যে বলেন, সরকার জুলাই সনদ নিয়ে তালবাহানা করেছেন কিন্তু আমরা আদায় করে ছাড়বো।
“জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ছাড়া এনসিপি নির্বাচনে অংশ নেবে না।” — এই সাফ বার্তা দিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, যিনি বৃহস্পতিবার নীলফামারীর সৈয়দপুরে ‘জুলাই শহীদ’ সাজ্জাদ হোসেনের কবর জিয়ারত শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন।
নাহিদ ইসলামের বক্তব্যে উঠে এসেছে জনগণের আন্দোলন ও শহীদের রক্তের প্রতি দায়বদ্ধতা, সেইসাথে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সরকার ও বিএনপি’র দ্বিমুখী কৌশলের প্রতি তীব্র সমালোচনা।
এনসিপি’র বিরুদ্ধে হামলা ও ‘পরাজিত শক্তি’র ষড়যন্ত্র
নাহিদ ইসলাম অভিযোগ করেন,
“গতকালও আমাদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ককটেল হামলা হয়েছে। বিএনপির সন্ত্রাসীরা ঘাপটি মেরে আছে—তাদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনতে হবে।”
তার দাবি অনুযায়ী,
“গণঅভ্যুত্থানের যোদ্ধাদের যদি নিরাপত্তা না থাকে, তাহলে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা কোথায়?”
সাংবিধানিক পরিবর্তনের দাবি: এনসিপি’র তীব্র অবস্থান
পথসভায় দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন,
“নতুন বাংলাদেশ গড়তে হলে আওয়ামী সংবিধান বদলাতে হবে। শুধুমাত্র ফ্যাসিস্টদের পতন নয়, ফ্যাসিবাদী কাঠামোরও অবসান দরকার।”
তিনি মনে করেন, বর্ণবাদী প্রশাসনিক অব্যবস্থার পরিবর্তন ছাড়া উন্নয়ন ও বৈষম্যহীন বাংলাদেশ অসম্ভব।
জনগণের ভাষায় সারজিস আলম
উত্তরাঞ্চলের সংগঠক সারজিস আলম বলেন,
“আর চাঁদাবাজি, দখলদারিত্ব, ঘুষ ছাড়া সরকারি অফিস চলবে না—এমন দেশ চাই না। মানুষ যেন দাস নয়, নাগরিক হিসেবে মর্যাদা পায়, সেই বাংলাদেশ চাই।”
উপস্থিত ছিলেন
এ সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন:
- জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন
- মুখ্য সমন্বয়কারী আবদুল হান্নান মাসউদ
- তাসনিয়া জারা, মুনিয়া শারমিন, নাহিদ সারোয়ার নিভা, আবু সাঈদ লিউনসহ জেলা ও উপজেলা নেতারা।
এনসিপি জুলাই সনদকে তাদের রাজনৈতিক ও আদর্শিক রূপরেখার কেন্দ্রবিন্দু বলে মনে করছে।
নাহিদ ইসলামের বক্তব্য এবং সৈয়দপুরে এনসিপি নেতৃত্বের অবস্থান স্পষ্ট করেছে যে—এই দল সমঝোতা নয়, রূপরেখা বাস্তবায়নেই বিশ্বাস করে।
বাংলাদেশের নির্বাচন প্রক্রিয়া এখন জুলাই সনদ বনাম সংবিধান রক্ষার বিতর্কে এসে ঠেকেছে। এর পরিণতি কোন দিকে গড়াবে—তা সময় বলবে।
