 
                  বঙ্গবন্ধুকে বাদ দিয়ে বাংলাদেশের ইতিহাস কল্পনাও অসম্ভব। ড. ইউনুসের নেতৃত্বে চলছে এক ভয়ঙ্কর ষড়যন্ত্র। পড়ুন নয়ন বিশ্বাস রকির বিশ্লেষণ।
বঙ্গবন্ধু মানেই বাংলাদেশ, বঙ্গবন্ধুকে বাদ দিয়ে বাঙালি ঐতিহ্য, মহান মুক্তিযুদ্ধ ও ইতিহাস কখনো ভাবাই যায় না।
১৯৬৬ সালের ৭ জুন পূর্ব পাকিস্তানে হরতাল ও ধর্মঘট পালিত হয়। মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলনে ভীত পাকিস্তান সরকারের নির্দেশে আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি চালানো হয়।
তেজগাঁও এলাকায় শ্রমিক মনু মিয়া, রুস্তমসহ ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে মোট ১৪ জন নিহত হন। এই হত্যাকাণ্ডের পর ছয় দফার পক্ষে আন্দোলন বেগবান হয়।
সেই দিন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন, “আমি একা থাকি, এ কথা কখনো আমার মন থেকে যায় না। এতে আমার শরীর নষ্ট হবার সম্ভাবনা আছে। আমাকে ও আওয়ামী লীগ কর্মীদের সরকার বেশি কষ্ট দিতে চাই কারাগারে বন্দি করে। আজ পূর্ব পশ্চিম পাকিস্তানের আওয়ামী লীগ নেতারা কারাগারে বন্দী। আওয়ামী লীগ আজ জেলখানায়। মানুষকে জেলে দিতে পারে কিন্তু নিজেকে জেলে দিতে পারেন।
২৪ শে ১৯৬৭ “” বুধবার ।
জীবনের কত হাজার হাজার দিন এই কারাগারে একাকী কাটাইয়া দিলাম আর কতকাল কাটাতে হয় কেই- বা জানে! তবুও দুঃখ আমার নাই, নীতি ও আদর্শের জন্য অত্যাচার সহ্য করছি।
যুগে যুগে অনেকে নেতা ও মনীষী নিজের আদর্শ এবং সত্যের জন্য জীবন দিয়েছে। কারাগারে বসে ধুঁকে ধুঁকে মারা গিয়েছে। তাদের কথা কেউ তো আজ মনে পড়ে না। বাংলার মাটির দোষেই বোধহয়!
যে বাঙালিরা আমাকে আসামি করেছে, আটকাইয়া রাখছে, জেল দিয়েছে- তারাও তো এই মাটির মানুষ এবং উচ্চ শিক্ষিত। এদের ছেলে মেয়ে ও ভবিষ্যৎ বংশধরের জন্যই তো আমি ও আমার মত শত শত কর্মীরা কারাবরণ করেছি। আর কত লোকেই না জীবন দিল তারই ভাইয়ের গুলিতে। এরাও একদিন বুঝবে, তবে সময় থাকবে না’।
২২ শে জুন ১৯৬৬ “” সোমবার।
” পাকিস্তান হওয়ার পরেও দালালি করার লোকের অভাব হলো না- যারা সবকিছুই পশ্চিম পাকিস্তানি দিয়ে দিচ্ছে সামান্য লোভে।
বাংলার স্বার্থ রক্ষার জন্য যারা সংগ্রাম করেছে, তাদের বুকে গুলি করতে বা কারাগারে বন্দি করতে এই দেশের সেই বিশ্বাসঘাতকদের অভাব হয় নাই। এই সুজলা- সুফলা বাংলাদেশ এত উর্বর; এখানে যেমন শোনার ফসল হয়, আবার পর গেছে আর আগাছা ও বেশি জন্মে। জানিনা বিশ্বাসঘাতকদের হাত থেকেই শোনার দেশকে বাঁচানোর যাবে কিনা!”
২০ শে জুন “” সোমবার ।
বাংলাদেশ শুধু কিছু বেইমান ও বিশ্বাসঘাতকদের জন্যই সারা জীবন দুঃখ ভোগ করলো। আমরা সাধারণত মীর জাফর আলী কার কথাই বলে থাকি। মীর জাফর আনলো ইংরেজিকে, সিরাজদুল্লাহ কে হত্যা করল বিশ্বাসঘাতকতা করে । ইংরেজের বিরুদ্ধে এই বাঙালি রাই প্রথম জীবন দিয়ে সংগ্রাম শুরু করে; সিপাহী বিদ্রোহ শুরু হয় ব্যারাকপুর থেকে। আবার বাংলাদেশের লোকের অভাব হয় না ইংরেজকে সাহায্য করবার। ইংরেজদের বিরুদ্ধে আন্দোলনরত এই মাটির ছেলেদের ধরিয়ে দিয়ে ফাঁসি দিয়েছে এ দেশের লোকেরাই- সামান্য টাকা বা প্রমোশনের জন্য”।
তারপরেও বাঙালি কখনো থামেনি , জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। বঙ্গবন্ধুকে জানতে হলে নিজেকে আগে আদর্শের সাথে শুদ্ধ করতে হবে ।
বঙ্গবন্ধুকে জানা মানে বাংলাদেশকে শ্রদ্ধা করা মুক্তিযুদ্ধকে সম্মান করা। আমাদের তরুণ প্রজন্মের কাছে দেশবিরোধী অপশক্তি চক্রান্ত করে আজকে ইতিহাসকে মুছে ফেলার অপচেষ্টা করছে , তারা কখনো জানেনা তাদের এই অপ চেষ্টা কখনো সার্থক হবে না সফল হবে না। বাংলাদেশের সর্বস্তরের মানুষ তা রুখে দিবে।
১৯৬৮ সালের তিন ফেব্রুয়ারি পাকিস্তান সরকার বঙ্গবন্ধু কে এক নম্বর আসামি করে মোট ৩৫ জন রাজনৈতিক, বাঙালি সামরিক বাহিনীর সদস্য ও সি এস পি অফিসারের বিরুদ্ধে পাকিস্তান কে বিচ্ছিন্ন করার অভিযোগ এনে রাষ্ট্রদ্রোহী হিসেবে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা দায়ের করে।
১৭ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুকে জেলগেট থেকে গ্রেফতার করে ঢাকার সেনানিবাসে আটক রাখা হয়। বঙ্গবন্ধু সহ আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার অভিযুক্ত আসামিদের মুক্তির দাবিতে সারাদেশে বিক্ষোভ শুরু হয়।
১৯ জুন ঢাকার সেনানিবাসে কঠুর নিরাপত্তার মধ্যে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার আসামিদের বিচার করা শুরু হয়। তখনো বঙ্গবন্ধু থামেনি ও বাঙালি জাতি থামেনি।
২০২৪-২৫ সালে ষড়যন্ত্রকারীরা বাংলাদেশকে ধ্বংস করার পরিকল্পনায় মেথে উঠেছে, বাংলাদেশকে নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে , স্বাধীন সোনার ডিজিটাল স্মার্ট বাংলাদেশকে বিক্রি করে দিতে চাচ্ছে। তাদের ক্ষমতাকে দীর্ঘায়িত করার লক্ষ্যে।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ইতিহাস তাই বলে , যখনই বাংলাদেশ অন্ধকারের দিকে ধাবিত হয়েছে , আওয়ামী লীগ আলোর দিশারী হয়ে নেতৃত্ব দিয়ে বাংলাদেশকে রক্ষা করেছে মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন এনেছে ।
এই তথাকথিত ব্যবসায়ী অশুভ শক্তি বারবার চেষ্টা করেছে বাংলাদেশকে মহান মুক্তিযুদ্ধকে ইতিহাস থেকে মুছে ফেলার ষড়যন্ত্র মুক্তিযুদ্ধকে বিতর্কিত করার চেষ্টা কিন্তু বারবার ব্যর্থ হয়েছে।বাংলাদেশের মানুষ জানে বুঝে এই নরপশুদের কে বাঙালি জাতি ভালো করে অনুধাবন করেছে। বিগত ১১ মাসে বাংলাদেশের শান্তিপ্রিয় মানুষ কি পেয়েছে ?
অধ্যাপক মোঃ ইউনুছের অপশাসন নির্যাতন দমন নিপীড়ন ধর্ষন নারীদেরকে ঘরে বন্দি করে রাখা , নিরপরাধ মানুষদের কে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা এবং তার পাশাপাশি মামলা বাণিজ্য। এই হলো অধ্যাপক মোঃ ইউনূসের সরকার ব্যবস্থার প্রথম অধ্যায়।
নতুন বাংলাদেশ বলে বাংলাদেশের মানুষের সাথে প্রতারণা করেছে এখন মানুষ বুঝে গেছে সব পরিষ্কার হয়ে আসছে।
যতই ষড়যন্ত্র করুক না কেন ? বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ তথা এশিয়া উপমহাদেশের প্রখ্যাত মহান বাঙালির নেতা হিসেবেই থাকবে চিরকাল বাঙালি হৃদয়ে।

নয়ন বিশ্বাস রকি 
সাবেক ছাত্রলীগের অন্যতম নেতা।

 
                         
         
         
        