কারবালার ময়দানে কি ঘটবে, তা প্রায় ৫০ বছর আগেই প্রিয় নবীজি ﷺ জানতেন। হযরত ফাতেমা রা. কে কাফনের কাপড় বণ্টন, হোসাইনের জন্য অশ্রু, ও ভবিষ্যদ্বাণী সবই প্রমাণ করে কারবালা পূর্বঘটিত এক আল্লাহর পরিকল্পনা।
ইসলামের ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় ট্র্যাজেডির নাম কারবালা। কিন্তু এই ঘটনা যেন কেবল ঘটেইনি—তা ছিল পূর্বনির্ধারিত। প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (ﷺ) তাঁর জীবদ্দশায়ই, তা প্রায় ৫০ বছর আগেই কারবালার বিষাদময় ভবিষ্যৎ কাহিনী তাঁর পরিবারকে জানিয়ে যান।
তিনি জানতেন, কিভাবে হোসাইন (রা.) মরুপ্রান্তরে একা, নির্জন, বেওয়ারিশ হয়ে শাহাদাত বরণ করবেন।
কাফনের কাপড়ের বণ্টন:
নবীজি ﷺ তাঁর ঘরের একটি বাক্স থেকে কাফনের কাপড় বের করে চার ভাগে ভাগ করেন—নিজের জন্য, ফাতেমা রা., আলী রা., হাসান রা.।
কিন্তু হোসাইনের জন্য কাপড় নেই।
উত্তরে নবীজি ﷺ বলেন—“হোসাইনের তো জানাজাই হবে না, মরুর বুকে বেওয়ারিশ লাশ হয়ে পড়ে থাকবে।”
কারবালার বর্ণনা ফাতেমাকে:
এই কথাগুলো যখন মা ফাতেমা জানতে চান, নবীজির মুখ মলিন হয়ে যায়।
তিনি বলেন, হোসাইন যখন শহীদ হবেন, তখন তাঁর সন্তানরাও শত্রু শিবিরে বন্দী থাকবে, গলায়, হাতে, কোমরে শৃঙ্খল বাধা থাকবে।
রাসূলের অশ্রু:
ইমাম হোসাইনের ঠোঁটে ও গলায় চুমু দিয়ে নবীজি ﷺ অশ্রুপাত করেন। বলেন, “এই ঠোঁটেই তৃষ্ণায় ফেটে যাবে, এই গলাতেই ছুরি চালাবে!”
রাসূল ﷺ-এর বাণী:
“হোসাইন আমার থেকে, আর আমি হোসাইন থেকে। যে হোসাইনকে ভালোবাসে, আল্লাহ তাকে ভালোবাসেন।” (তিরমিযি, হাদীস: ৩৭৮৯)
কারবালা ইতিহাস নয়, কারবালা ঈমানের পরীক্ষা।
নবীজির অশ্রু, মা ফাতেমার শোক, ও হোসাইনের শাহাদাত আমাদের হৃদয় ভেঙে দেয়।
যার অন্তর কাঁদে হোসাইনের জন্য, সে-ই প্রকৃত মোমিন।
কারবালা ভুলে যাওয়া নয়, হৃদয়ে ধারণ করার শিক্ষা দেয়।
আপনার চোখে যদি অশ্রু আসে, তবে জেনে নিন—আপনি এখনও ঈমানের পথে আছেন।
