বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে ‘গেরিলা প্রশিক্ষণ’ বিতর্কে। সন্ত্রাসবিরোধী আইনের আওতায় গ্রেফতার হওয়া মেজর সাদিকুল হক ওরফে মেজর সাদিকের স্ত্রী সুমাইয়া জাফরিনকে ৫ দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছেন আদালত।
‘গেরিলা প্রশিক্ষণ’ কাদের দেওয়া হচ্ছিল? সূত্র জানায়, কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকা আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও অন্যান্য সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের গোপনে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছিল।
এই প্রশিক্ষণের নেতৃত্বে ছিলেন সেনা কর্মকর্তা মেজর সাদিকুল হক, যিনি বর্তমানে সেনা হেফাজতে আছেন। আর এই প্রশিক্ষণের কাজে প্রত্যক্ষ ভূমিকা রেখেছেন তার স্ত্রী সুমাইয়া জাফরিন, যাকে প্রথমে পুলিশের একজন কর্মকর্তা দাবি করা হলেও পুলিশ সদর দপ্তর জানায়—এই নামে পুলিশের কোনো নারী কর্মকর্তা নেই।
মামলার বিবরণ
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ বুধবার (৬ আগস্ট) সুমাইয়াকে গ্রেফতার করে। পরদিন তাকে আদালতে হাজির করে ৭ দিনের রিমান্ড চায় পুলিশ।
উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
রাষ্ট্রপক্ষে রিমান্ডের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন পাবলিক প্রসিকিউটর, অন্যদিকে আসামিপক্ষ জামিনের আবেদন জানালেও তা নামঞ্জুর হয়।
সেনাবাহিনীর প্রতিক্রিয়া
সেনাবাহিনী জানায়, অভিযুক্ত মেজর সাদিকুল হক সাদেক বর্তমানে তাদের হেফাজতে রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে অভ্যন্তরীণ তদন্ত চলছে।
দোষী প্রমাণিত হলে সেনাবাহিনীর নিয়ম অনুযায়ী শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রাজনৈতিক পটভূমি
প্রসঙ্গত, ২০২৫ সালের শুরুর দিকে দেশে আওয়ামী লীগসহ এর সহযোগী সংগঠনগুলোর কার্যক্রম সাময়িকভাবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়।
এরপর থেকেই গোপনে সংগঠন পুনর্গঠন ও সশস্ত্র প্রশিক্ষণ–সংক্রান্ত গুঞ্জন চলছিল।
এবার মেজর সাদিক এবং তার স্ত্রী সুমাইয়ার গ্রেফতার সেই সন্দেহকে জোরালো করেছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি শুধু একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, বরং জাতীয় নিরাপত্তা, রাজনীতি ও সেনা-সংশ্লিষ্ট অস্থিরতার গভীর ইঙ্গিত বহন করে।
বিশ্লেষণ: এটা কি গোপন প্রতিরোধ নাকি অন্য কিছু?
মহলবিশেষ বলছে, আওয়ামী লীগপন্থী একটি গোপন প্রতিরোধ গোষ্ঠী হয়তো গঠন করার চেষ্টা চলছে, যেখানে সাবেক বা বর্তমান সেনা কর্মকর্তারাও জড়িত।
অন্যদিকে অনেকেই এটিকে একটি গভীর ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছেন, যার পেছনে রয়েছে উচ্চপর্যায়ের রাজনৈতিক বা আন্তর্জাতিক ইন্ধন।
সারসংক্ষেপ:
- সুমাইয়া জাফরিনকে ৫ দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছেন আদালত
- তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা
- গেরিলা প্রশিক্ষণে আওয়ামী কর্মীদের জড়িত থাকার অভিযোগ
- মেজর সাদিক সেনা হেফাজতে, তদন্ত চলমান
- ঘটনাটি জাতীয় নিরাপত্তা ও রাজনৈতিক পুনর্বিন্যাসের ইঙ্গিত বহন করছে
এই ঘটনায় জাতীয় রাজনীতির ভবিষ্যৎ কোন দিকে মোড় নেয়, তা এখন সময়ের অপেক্ষা।
