 
                  মোনাফেকি ইসলাম সমর্থন করে না। অথচ জামাত-শিবির রাজনৈতিক টিকে থাকার কৌশল হিসেবে মোনাফেকিকে ব্যবহার করেছে। আলেমদের দৃষ্টিকোণ থেকে এই প্রবণতা নিয়ে বিশ্লেষণ পড়ুন।
বাংলাদেশের রাজনীতিতে জামাত-শিবিরের কৌশল বহু বছর ধরেই বিতর্কিত। এদের রাজনৈতিক আচরণে এক বৈশিষ্ট্য বারবার সামনে এসেছে—মোনাফেকি। অর্থাৎ, অন্তরে এক চিন্তা লালন করা আর মুখে অন্য কথা বলা। ইসলামী পরিভাষায় ‘মুনাফিক’ এমন ব্যক্তিকে বোঝায়, যে বাহ্যিকভাবে ইসলাম ও ন্যায়ের কথা বলে কিন্তু অন্তরে তার উদ্দেশ্য সম্পূর্ণ ভিন্ন
কুরআনে মোনাফেকদের ব্যাপারে সুস্পষ্ট সতর্কবাণী রয়েছে।
সূরা নিসা (৪:১৪৫)-এ বলা হয়েছে:
“নিশ্চয়ই মুনাফিকরা জাহান্নামের সর্বনিম্ন স্তরে থাকবে।”
অর্থাৎ ইসলাম স্পষ্টভাবে মোনাফেকি ও ভণ্ডামিকে সবচেয়ে ভয়াবহ অপরাধ হিসেবে অভিহিত করেছে।
নবী করীম (সা.)-এর হাদিসেও মুনাফিকের বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করা হয়েছে—
- কথা বললে মিথ্যা বলে
- ওয়াদা করলে তা ভঙ্গ করে
- আমানত পেলে খেয়ানত করে
- শত্রুতায় সীমালঙ্ঘন করে
এই বৈশিষ্ট্যগুলোকে যদি রাজনীতির প্রেক্ষাপটে বিচার করা হয়, তাহলে জামাত-শিবিরের বহু রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড ইসলামের শিক্ষা থেকে স্পষ্ট বিচ্যুত
ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যায়, পাকিস্তানপন্থী অবস্থানকে আড়াল করতে জামাত-শিবির মুক্তিযুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে গণতন্ত্র ও ইসলামি আদর্শের নাম ভাঙিয়ে টিকে থাকার চেষ্টা করেছে।
একদিকে তারা ইসলামী নীতি ও নৈতিকতার কথা বলে, অন্যদিকে ক্ষমতার ভাগীদার হতে গিয়ে হিংসা, ষড়যন্ত্র ও গোপন চুক্তির আশ্রয় নেয়।
এই দ্বিমুখী অবস্থানই তাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতিকে “মোনাফেকি কৌশল” হিসেবে পরিচিত করেছে।
প্রখ্যাত ইসলামী চিন্তাবিদ ও আলেমদের অভিমত অনুযায়ী—
- মোনাফেকি কোনোভাবেই ইসলাম অনুমোদন করে না।
- ইসলামী রাজনীতি ও নৈতিক নেতৃত্বে স্বচ্ছতা ও সত্যনিষ্ঠা অপরিহার্য।
- মিথ্যা, প্রতারণা বা দ্বিমুখী আচরণ ইসলামী শাসনতন্ত্রের ভিত্তি ধ্বংস করে।
অতএব, জামাত-শিবির যেভাবে মোনাফেকিকে রাজনৈতিক অস্ত্র বানিয়েছে, তা ইসলামী নীতির সম্পূর্ণ পরিপন্থী।
আজকের বাংলাদেশে ইসলামের নাম ভাঙিয়ে যারা মোনাফেকির আশ্রয় নেয়, তাদের বিরুদ্ধে সমাজকে সজাগ থাকতে হবে।
ইসলাম সত্য, ন্যায় ও সৎ নেতৃত্বকে সমর্থন করে; দ্বিমুখী রাজনীতি বা মোনাফেকি ইসলামি মূল্যবোধের চরম লঙ্ঘন।

 
                         
         
         
        