ইরান-ইসরাইল যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে ২১টি মুসলিম দেশ যৌথ বিবৃতিতে উত্তেজনা হ্রাস ও মধ্যপ্রাচ্যকে পরমাণু অস্ত্রমুক্ত রাখার দাবি জানিয়েছে।
মধ্যপ্রাচ্যে চলমান ইসরাইল-ইরান সংঘাতে নতুন মাত্রা যুক্ত হয়েছে মুসলিম বিশ্বের কূটনৈতিক হস্তক্ষেপে। ইসরাইলের সাম্প্রতিক বিমান হামলার জবাবে ইরানের পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলায় ইতোমধ্যেই দুই পক্ষের তিন শতাধিক প্রাণহানি ঘটেছে। এমন উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে মিশরসহ ২১টি মুসলিম দেশ একযোগে নিন্দা জানিয়েছে এবং তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছে।
যৌথ বিবৃতি কী বলছে?
সোমবার (১৬ জুন) এক খোলা চিঠিতে আলজেরিয়া, সৌদি আরব, পাকিস্তান, তুরস্ক, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ ২১টি মুসলিম দেশ এই বিবৃতি দেয়। এতে বলা হয়—
“ইরান-ইসরাইল সংঘাত আরও বড় আকার ধারণ করতে পারে। এই মুহূর্তে মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধবিরতি একান্ত প্রয়োজন।”
তারা মধ্যপ্রাচ্যকে "নিউক্লিয়ার ফ্রি জোন" হিসেবে প্রতিষ্ঠার দাবি তোলে এবং জাতিসংঘের Non-Proliferation Treaty (NPT) অনুযায়ী সব রাষ্ট্রকে স্বাক্ষর করার আহ্বান জানায়।
কোন দেশগুলো বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছে?
এ তালিকায় রয়েছে—
মিশর, আলজেরিয়া, বাহরাইন, ব্রুনেই, চাদ, কোমোরোস, জিবুতি, গাম্বিয়া, ইরাক, জর্ডান, কুয়েত, লিবিয়া, মৌরিতানিয়া, ওমান, পাকিস্তান, কাতার, সৌদি আরব, সুদান, সোমালিয়া, তুরস্ক এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত।
ভূরাজনৈতিক প্রভাব বিশ্লেষণ
বিশ্লেষকদের মতে, এই বিবৃতি দুইটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বহন করে:
সংঘাত নিরসনে মুসলিম বিশ্বের ঐক্যবদ্ধ উদ্যোগ।
মধ্যপ্রাচ্যে পরমাণু অস্ত্র প্রতিযোগিতা রোধে সক্রিয় ভূমিকা।
উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো—এই প্রথমবারের মতো এতগুলো মুসলিম দেশ একসঙ্গে এ ধরনের বিবৃতি দিল, যেখানে সামরিক উত্তেজনার পাশাপাশি পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ এর প্রসঙ্গও স্পষ্টভাবে এসেছে।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
এই বিবৃতির প্রেক্ষিতে এখন পর্যন্ত ইসরাইল বা ইরান সরাসরি কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি। তবে যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, তারা ইসরাইলের আত্মরক্ষার অধিকারকে সমর্থন করলেও শান্তিপূর্ণ সমাধান চায়।
মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠা এবং পরমাণু অস্ত্র প্রতিযোগিতা রোধে মুসলিম দেশগুলোর এই বিবৃতি একটি বড় কূটনৈতিক বার্তা। আগামী দিনে এই উদ্যোগ কী ধরনের রাজনৈতিক ফলাফল বয়ে আনে, তা বিশ্ব রাজনীতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে।
