সরকার ব্যর্থ হওয়ায় এনসিপি ‘জুলাই সনদ’ প্রকাশের ঘোষণা দিয়েছে। নাহিদ ইসলাম জানালেন, ১ জুলাই থেকে ‘জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচি চলবে সারাদেশে। এটি হতে পারে ভবিষ্যৎ রাজনীতির বিকল্প দিকনির্দেশনা।
মূল প্রতিবেদন:
সরকার বিচার ও সংস্কার সংক্রান্ত ঘোষণাপত্র দিতে ব্যর্থ হওয়ায় এবার নিজ উদ্যোগে ‘জুলাই সনদ’ প্রকাশ করবে বলে ঘোষণা দিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। রোববার (২৯ জুন) সকালে ঢাকার দলীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম এ ঘোষণা দেন।
নাহিদ বলেন, “৩০ দিনের সময়সীমা পেরিয়ে গেছে, সরকার কোনো ঘোষণাপত্র দেয়নি। আমরা জনগণের দাবির প্রতি সম্মান জানিয়ে নিজেরাই জুলাই সনদ প্রকাশ করব।”
তিনি জানান, শহীদ আবু সাঈদের কবর জিয়ারতের মাধ্যমে ১ জুলাই ‘জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচির সূচনা হবে। এটি ৩০ জুলাই পর্যন্ত চলবে এবং দেশের বিভিন্ন প্রান্তে শহীদ ও আহতদের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তাদের অভিজ্ঞতা সংগ্রহ করা হবে।
🔍 প্রেক্ষাপট:
গত বছরের জুলাইয়ে অনুষ্ঠিত গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে এনসিপি এই কর্মসূচি হাতে নেয়। নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, “যারা আগামী দিনে ক্ষমতায় আসবেন, তাদের জনগণের সামনে স্পষ্টভাবে জানাতে হবে—বিচার প্রক্রিয়া কীভাবে হবে, কোন রোডম্যাপে হবে।”
ঐকমত্য কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, “সংস্কারের যাত্রা একসময় আশাব্যঞ্জক ছিল, কিন্তু বাস্তবে কিছুটা পিছিয়ে পড়েছি।” তিনি জানান, শহীদ আবু সাঈদের শাহাদাতবার্ষিকীতে জুলাই সনদ প্রকাশের ইচ্ছা থাকলেও তা এই মুহূর্তে সম্ভব নয়। তবে জুলাই মাসেই দলটি এই ঘোষণাপত্র প্রকাশ করবে।
এছাড়া সারজিস আলমকে আহ্বায়ক করে ‘জুলাই পদযাত্রা’ বাস্তবায়নে একটি জাতীয় কমিটি গঠন করা হয়েছে।
📊 রাজনৈতিক বিশ্লেষণ:
বিশ্লেষকরা বলছেন, এনসিপির এই পদক্ষেপ ক্ষমতাসীন সরকারের উপর বিকল্প চাপ তৈরি করার একটি কৌশল। বিচারহীনতা, স্বচ্ছতার অভাব এবং গণআন্দোলনের দাবিকে সামনে রেখেই এনসিপি ‘জুলাই সনদ’ নিয়ে মাঠে নামছে।
এনসিপি হয়তো এখনও বড় নির্বাচনী শক্তি নয়, কিন্তু তারা ক্রমশ একটি আদর্শিক বিকল্প হিসেবে আত্মপ্রকাশ করছে। ‘জুলাই সনদ’ ভবিষ্যতের জন্য হতে পারে একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক দলিল, যেখানে থাকবে শাসন, বিচার ও সংস্কারের একটি বিকল্প রূপরেখা।
