জুলাই আন্দোলন আদৌ কি একটি স্বতঃস্ফূর্ত ছাত্রবিক্ষোভ ছিল, নাকি ছিল আন্তর্জাতিক ও দেশীয় মেটিকুলাস ষড়যন্ত্রের অংশ? বিএনপি-জামাত-শিবির, মার্কিন দূতাবাস, এবং পরিকল্পিত সহিংসতার ছায়া ঘিরে আজও উঠছে প্রশ্ন।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে জুলাই আন্দোলনকে অনেকেই গণআন্দোলনের প্রতীক হিসেবে দেখালেও, সময়ের পরিক্রমায় স্পষ্ট হয়ে উঠছে—এটি ছিল ‘মেটিকুলাসলি ডিজাইন্ড’ এক কৌশলী ষড়যন্ত্র। সাধারণ শিক্ষার্থীদের অসাম্প্রদায়িক চেতনাকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে বিদেশি প্রভাব এবং জামায়াত-শিবিরের সক্রিয় অংশগ্রহণে এই আন্দোলনকে সহিংস ও ধ্বংসাত্মক রূপ দেওয়া হয়।


শিবিরের অদৃশ্য আগমন ও ১৫ জুলাইয়ের অশনিসংকেত
২০১৩ সালের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং অন্যান্য বড় শিক্ষাঙ্গনে ইসলামী ছাত্রশিবির নিষ্ক্রিয় ছিল। অথচ জুলাই আন্দোলনের মধ্যে ১৫ জুলাই থেকেই ঢাবির রাজপথে তাদের সুসংগঠিত উপস্থিতি দেখা যায়। (ছবি সংযুক্ত: বহিরাগত শিবির সদস্যের দেহে দলীয় পোশাক)
এর পরপরই আন্দোলনের গতি সহিংস রূপ নেয়, শুরু হয় পরিকল্পিতভাবে লাশ ফেলার খেলা। শুরুতে ছিল আবু সাইদের হত্যা, পরে পুলিশ ঝুলিয়ে রাখার ঘটনা—যাতে নিরাপত্তা বাহিনীর প্রতিক্রিয়া অনিবার্য হয়ে ওঠে।
প্রধান উপদেষ্টার মুখ ফসকা বক্তব্য: “Meticulously Designed Movement”
যুক্তরাষ্ট্রে ক্লিনটন ফাউন্ডেশনে এক অনুষ্ঠানে দেশের অন্তর্বর্তীকালীন প্রধান উপদেষ্টা বলে ফেলেন, “It’s a meticulously designed movement.”
এই বক্তব্যে বহু প্রশ্নের জন্ম দেয়:
- তাহলে এটি কি আদৌ স্বতঃস্ফূর্ত ছিল?
- “Meticulous Design”-এর উপাদান ছিল কী?
- পরিকল্পিত সহিংসতা
- স্নাইপার অ্যাসাসিনেশন
- আন্দোলনের এককেন্দ্রিক নিয়ন্ত্রণ জামাত-শিবিরের হাতে তুলে দেওয়া
আলোচনা বানচাল ও নাটকীয় সংঘর্ষ: উদ্দেশ্য ছিল Point of No Return
জুলাইয়ের প্রথমার্ধে আন্দোলনকারীরা একাধিকবার সরকারের উচ্চ পর্যায়ের সঙ্গে আলোচনায় বসেছিলেন—হান্নান মাসুদের প্রকাশিত ভিডিও (https://youtu.be/JuI98DKN0m8) সেই প্রমাণ বহন করে।
কিন্তু আলোচনার পরে নিজেরাই তা অমান্য করে সংঘর্ষে ফিরে যায়।
আরও বিস্ফোরক তথ্য আসে সেপ্টেম্বরের দিকে, যখন ছাত্রনেতা আব্দুল কাদের স্বীকার করেন, আন্দোলন যখন আপোষের দিকে যাচ্ছিল তখনই শিবির তা বানচাল করে দেয় (নিউজ লিংক: https://www.rtvonline.com/amp/others/education/292373)।
স্নাইপার হত্যা: মুগ্ধ, ফাইয়াজ এবং সাংবাদিক হত্যার উদ্দেশ্য কী ছিল?
কেন্দ্রীয় মঞ্চের কর্মী মুগ্ধ, এইচএসসি পরীক্ষার্থী ফাইয়াজ এবং এক সাংবাদিক—তিনজনেরই হত্যাকাণ্ড ঘটে রহস্যজনকভাবে। ভিডিও বিশ্লেষণে দেখা যায়, এরা প্রত্যেকেই পরিকল্পিতভাবে স্নাইপার কিলিংয়ের শিকার।
এতে করে জনমতকে উত্তপ্ত করে আন্দোলনে নতুন গোষ্ঠীকে টেনে আনা সহজ হয়। বিশেষ করে ফাইয়াজ হত্যার পরে এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা একযোগে আন্দোলনে নামে।
বিদেশি আশ্রয়-প্রশ্রয় ও নেতৃত্ব বাছাই: মার্কিন দূতাবাসের ভূমিকা
আন্দোলনের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে মার্কিন দূতাবাসের নিয়মিত যোগাযোগ এবং দূতাবাসের পক্ষ থেকে আশ্রয় দেওয়া নিয়ে বিভিন্ন সূত্রে ইতোমধ্যে প্রমাণ এসেছে।
- জুলকারনাইন সায়েরের ফেসবুক পোস্ট
- আসিফ মাহমুদের বই: “আমার আগুনে বাংলাদেশ”
এসব সূত্রে উঠে আসে, আন্দোলনের পরবর্তী সরকারে কারা থাকবে, কোন উপদেষ্টা নিয়োগ পাবে—তা ঠিক হয়েছিল ওয়াশিংটনে বসে।
রাজাকারদের পুনর্বাসন: শাহবাগের প্রতিচ্ছবি উল্টো হয়ে গেল কেন?
এক সময় “তুমি কে আমি কে, রাজাকার রাজাকার” স্লোগানের মঞ্চ আজ রাজাকারের নামেই রাস্তা ঘোষণার কেন্দ্রে পরিণত হয়!
- জাতীয় সংগীত গাওয়ার সময় বাধা
- মুজাহিদ ও নিজামির নামে আলোক প্রজ্বলন
- হিজবুত তাহেরিদের মুখে সেই স্লোগান!
অর্থাৎ, জামাত-শিবির নিজেদের আন্দোলনকে ধর্মনিরপেক্ষ রঙে রাঙিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করেছিল, একবার উদ্দেশ্য সফল হতেই মুখোশ খুলে পড়ে।
অন্তিম স্বীকারোক্তি: সরকার পতনের আন্দোলন ছিল শুরু থেকেই!
নভেম্বর মাসে নাগরিক টিভির এক সাক্ষাৎকারে হান্নান মাসুদ বলেন, “১৬ তারিখে সরকার সব দাবি মেনে নিয়েছিল। কিন্তু সেটা গ্রহণ না করে সরকার পতনের নতুন ইস্যু খোঁজার সিদ্ধান্ত ছিল। আমাদের টার্গেট ছিল বিপ্লবী সরকার গঠন।”
(ভিডিও: https://youtu.be/rvXnxMNN9rc)
এতে স্পষ্ট যে, রক্ত ঝরিয়ে এক সুপরিকল্পিত উদ্দেশ্যের দিকেই এগোনো হচ্ছিল।
জুলাই আন্দোলন একটি গণআন্দোলনের মুখোশে পরিচালিত পরিকল্পিত রাজনৈতিক অপারেশন। সাধারণ ছাত্রদের মগজধোলাই করে জামাত-শিবির ও বিদেশি শক্তি ব্যবহার করেছে তাদের শত্রু সরকারকে নামাতে।
আজ সেই আন্দোলনের নেতৃত্ব এবং পরিকল্পনাকারীরা নিজেরাই একে মেনে নিচ্ছে ‘অরগানিক’ নয় বরং ‘পেইড অপারেশন’ ছিল।
