 
                  সিলেট, গাজীপুর, নাটোর ও মৌলভীবাজারে একই দিনে চারজনকে হত্যাকাণ্ড ঘটনায় গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে হিউম্যান রাইটস ডেভেলপমেন্ট সেন্টার (এইচআরডিসি)। সংগঠনটি বলেছে, এসব হত্যাকাণ্ড মানবাধিকার ও আইনের শাসনের ওপর ভয়াবহ আঘাত।
বাংলাদেশে একই দিনে চারটি হত্যাকাণ্ড দেশজুড়ে আতঙ্ক ও ক্ষোভ তৈরি করেছে। বৃহস্পতিবার রাতে সিলেট, গাজীপুর, নাটোর ও মৌলভীবাজারে ঘটে যাওয়া এই হত্যাকাণ্ডগুলোকে মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ডেভেলপমেন্ট সেন্টার (এইচআরডিসি) ‘মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন’ আখ্যা দিয়েছে।
শুক্রবার গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে হিউম্যান রাইটস ডেভেলপমেন্ট সেন্টার (এইচআরডিসি) সেক্রেটারি জেনারেল মাহবুল হক বলেন,
“ধারাবাহিক হত্যাকাণ্ড কেবল ব্যক্তিগত ট্র্যাজেডি নয়, বরং আইনের শাসনের ওপর ভয়াবহ আঘাত।
রাষ্ট্রের নীরবতা বা বিলম্ব কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।” তিনি আরও বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারকে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।
প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ তদন্ত নিশ্চিত করে অপরাধীদের বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।
চারটি হত্যাকাণ্ডের বিবরণঃ
গাজীপুরে সাংবাদিক হত্যা: আসাদুজ্জামান তুহিন নামের এক সাংবাদিককে কুপিয়ে ও জবাই করে হত্যা করা হয়।
স্থানীয় সাংবাদিক সমাজ বলছে, পেশাগত কারণে তিনি দীর্ঘদিন ধরে হুমকির মুখে ছিলেন।
নাটোরে চালক খুন: গোপালপুরে প্রাইভেটকার চালক নাজমুলকে গলা কেটে হত্যা করা হয়।
স্থানীয়রা ধারণা করছেন, এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড, যা ছিনতাইয়ের চেয়ে গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ।
মৌলভীবাজারে ব্যবসায়ী খুন: ব্যবসায়ী শাহ ফয়জুর রহমান রুবেলকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
পরিবার জানিয়েছে, ব্যবসায়িক প্রতিযোগিতা ও প্রভাব বিস্তারের কারণে এই হত্যাকাণ্ড ঘটতে পারে।
সিলেটে ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে মৃত্যু: কিন ব্রিজ এলাকায় ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে নিহত হন ডালিম আহমেদ। স্থানীয়রা বলছেন, আইনশৃঙ্খলার অবনতির কারণে এমন ঘটনা বেড়েই চলেছে।
মানবাধিকার ও আইনের শাসনের প্রশ্ন
এইচআরডিসি মনে করছে, একদিনে ভিন্ন ভিন্ন স্থানে চারটি হত্যাকাণ্ড কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, বরং দেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতির ভয়াবহ সংকেত।
সংস্থাটি বলছে, যদি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আরও শক্তিশালী ও জবাবদিহিমূলক করা না হয়, তবে জনগণের রাষ্ট্রের প্রতি আস্থা ভেঙে পড়বে।
এছাড়া তারা সতর্ক করেছে যে, হত্যাকাণ্ডের তদন্তে স্বচ্ছতা না থাকলে এবং দোষীরা বিচার থেকে পার পেলে বিচারহীনতার সংস্কৃতি আরও গভীর হবে।
এর ফলে ভবিষ্যতে অপরাধ প্রবণতা বৃদ্ধি পাবে, আর সাধারণ মানুষ আরও বেশি ঝুঁকির মুখে পড়বে।
জনআস্থা পুনরুদ্ধারের আহ্বান
এইচআরডিসি জোর দিয়ে বলেছে, নাগরিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের মৌলিক দায়িত্ব। সরকারকে অবিলম্বে পদক্ষেপ নিয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার আহ্বান জানিয়েছে তারা।
একই সঙ্গে সাংবাদিক ও মানবাধিকারকর্মীদের সুরক্ষায় বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়ার তাগিদ দিয়েছে সংস্থাটি।
সংস্থাটির মতে, “মানুষ যদি মনে করে রাষ্ট্র তাদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ, তাহলে আস্থা হারাবে এবং সামাজিক অস্থিরতা আরও বেড়ে যাবে।”

 
                         
         
         
        