 
                  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী আলী হুসেনকে এক নারী প্রার্থীকে ‘গণধর্ষণ’ হুমকির দায়ে ছয় মাসের জন্য বহিষ্কার করেছে কর্তৃপক্ষ। যৌন নিপীড়নবিষয়ক কমিটিতে অভিযোগ পাঠানো হয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) ছাত্র রাজনীতির অঙ্গনে ন্যক্কারজনক ও উদ্বেগজনক একটি ঘটনা সামনে এসেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে অংশ নেওয়া এক নারী প্রার্থীকে ‘গণধর্ষণের হুমকি’ দেওয়ায় সমাজবিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী আলী হুসেনকে বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) ঢাবির জনসংযোগ দপ্তর থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
তদন্ত ও শাস্তির সিদ্ধান্ত
ঘটনার পরপরই গঠিত প্রক্টরিয়াল তদন্ত কমিটি আলী হুসেনকে দায়ী করে তার বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ শাস্তি সুপারিশ করে।
সেই সুপারিশের ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাকে ছয় মাসের জন্য বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানায়, এ শাস্তি বিশ্ববিদ্যালয় অর্ডার অনুযায়ী প্রক্টরের এখতিয়ারভুক্ত সর্বোচ্চ শাস্তি।
একইসঙ্গে, তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়নবিষয়ক কমিটিতে পাঠানো হয়েছে। ফলে ভবিষ্যতে তার বিরুদ্ধে আরও কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিক্রিয়া
ঢাবি জনসংযোগ দপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়—
“কুরুচিপূর্ণ ভাষা, আক্রমণাত্মক বক্তব্য এবং প্রকাশ্যে ‘গণধর্ষণের হুমকি’ বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল্যবোধ ও আচরণবিধির সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
কোনোভাবেই এ ধরনের কর্মকাণ্ড বরদাশত করা হবে না।”
শিক্ষার্থীদের প্রতিক্রিয়া
ঘটনার পর ঢাবি শিক্ষার্থীরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া জানায়।
অনেকেই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এই বহিষ্কার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানালেও অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন—মাত্র ছয় মাসের বহিষ্কার কি এত ভয়াবহ অপরাধের উপযুক্ত শাস্তি?
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সবসময়ই মুক্তচিন্তা, গণতন্ত্র ও নারী অধিকারের দুর্গ হিসেবে পরিচিত।
কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে নারী শিক্ষার্থীদের হয়রানি ও হুমকির ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
এই ঘটনায় স্পষ্ট হলো যে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কঠোর অবস্থানে গেলেও এখনো শাস্তি প্রক্রিয়ায় যথাযথ কড়াকড়ি প্রয়োগ করা হয়নি।
সারসংক্ষেপে বলা যায়, ঢাবি শিক্ষার্থী আলী হুসেনকে বহিষ্কার শুধু একটি শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নয়,
বরং ভবিষ্যতে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নারীদের নিরাপত্তা ও মর্যাদা রক্ষার জন্য একটি সতর্কবার্তা।
তবে এ প্রশ্ন থেকেই যায়—মাত্র ছয় মাসের শাস্তি কি ভয়াবহ এ হুমকির জন্য যথেষ্ট?

 
                         
         
         
        