 
                  মেজর (অব.) হাফিজ অভিযোগ করেছেন, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় রচিত সংবিধানকে ভাঙচুর করে বিকৃত করার ষড়যন্ত্র চলছে। ইউনুসপন্থী গোষ্ঠী এ চক্রান্তে জড়িত বলে দাবি তার।
_মুক্তিবার্তা৭১
ঢাকা: আজ (২ আগস্ট) রাজধানীতে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে সাবেক মন্ত্রী এবং মুক্তিযোদ্ধা মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ অভিযোগ করেছেন, দেশের সংবিধানকে বিকৃত করার একটি গভীর চক্রান্ত চলছে। তার ভাষায়, “যে সংবিধান আমরা যুদ্ধ করে পেয়েছি, সেটিকে আজ ইতিহাসবিকৃতির মাধ্যমে মিথ্যা প্রমাণের চেষ্টা চলছে। এটি নিছক রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র নয়, বরং স্বাধীনতা ও জাতীয়তাবাদের ভিত্তি ধ্বংস করার একটি গভীর চক্রান্ত।”
সংবিধান ও ইতিহাসবিকৃতির অভিযোগ
হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, মুক্তিযুদ্ধের মূল মূল্যবোধ আজ প্রশ্নবিদ্ধ করা হচ্ছে।
নতুন করে সংবিধান ব্যাখ্যা দেওয়ার নামে প্রকৃত ইতিহাসকে বিকৃত করার চেষ্টা হচ্ছে। তার মতে, এটি শুধুমাত্র রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অংশ নয়; বরং এর পেছনে রয়েছে জাতীয় পরিচয় পরিবর্তনের এক নব্য-উদ্দেশ্য।
বিচারব্যবস্থার নিয়ন্ত্রণ ও প্রক্সি শাসনের ইঙ্গিত
প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি আরও দাবি করেন, দেশের বিচারব্যবস্থা ও আইনি কাঠামো বর্তমানে একটি বিশেষ গোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে।
তারা মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধ অস্বীকার করে নিজেদের সুবিধামতো আইন ও সংবিধানের ব্যাখ্যা দিচ্ছে।
যদিও তিনি সরাসরি কারও নাম উল্লেখ করেননি, তবে তার বক্তব্যে ইঙ্গিত ছিল ড. মুহাম্মদ ইউনূস ঘনিষ্ঠ কিছু আমলার দিকে।
হাফিজ একে অভিহিত করেন “প্রক্সি শাসন” এবং “অন্তর্বর্তীকালীন নব্য-পাকিস্তানপন্থী নীতিমালা।”
জাতির প্রতি সতর্কবার্তা
তার মতে, এই চক্রান্ত প্রতিহত করা না গেলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ইতিহাসের সত্য থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে।
তিনি বলেন, “এখনই প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে, না হলে একটি বিকৃত ইতিহাস এবং ভিন্নতর জাতিসত্তার বেড়াজালে আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম বন্দি হয়ে পড়বে।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষণ
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, হাফিজ উদ্দিন আহমেদের এই বক্তব্য কেবল রাজনৈতিক বিতর্ক নয়, বরং মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ঘিরে চলমান মতবিরোধের একটি প্রতিফলন।
বর্তমানে অন্তর্বর্তী সরকারের নীতি-অবস্থানের সঙ্গে অনেকের উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
বিশেষ করে সংবিধান ও ইতিহাসের পুনঃব্যাখ্যার প্রচেষ্টা এক ধরনের রাজনৈতিক বিভাজন তৈরি করছে।
শেষকথা
মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদের এই সতর্কবার্তা বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বহন করছে।
সংবিধান বিকৃতি ও জাতীয়তাবাদের ভিত্তি ধ্বংসের অভিযোগ কেবল রাজনৈতিক লড়াই নয়, এটি জাতীয় পরিচয় রক্ষার প্রশ্নেও পরিণত হয়েছে।
এখন দেখার বিষয়—অন্তর্বর্তী সরকার ও সংশ্লিষ্ট গোষ্ঠীগুলো এ বিষয়ে কীভাবে প্রতিক্রিয়া জানায় এবং জনগণ কতটা সচেতন প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারে।

 
                         
         
         
        