 
                  জামালপুর শহরে ৫০ হাজার টাকা চাঁদাবাজির অভিযোগে স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা হাবিবুর রহমানকে যৌথ বাহিনী হাতেনাতে আটক করেছে। ঘটনাটি রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটেও আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
জামালপুর শহরের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা হাবিবুর রহমানের চাঁদাবাজির অভিযোগে হাতেনাতে আটক হওয়ার ঘটনায়। শুক্রবার (২০ জুন) দিবাগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে শহরের শাহাপুর এলাকায় যৌথ বাহিনীর অভিযানে নগদ ৫০ হাজার টাকা সহকারে আটক হন হাবিবুর রহমান।
এই ঘটনা শুধু একটি ফৌজদারি অপরাধ নয়—বরং রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়নের একটি ভয়ঙ্কর উদাহরণ। এ ঘটনাটি স্থানীয় রাজনৈতিক পরিবেশ, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এবং সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা বিষয়ে উদ্বেগের বার্তা দিচ্ছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র মতে, জামালপুর পৌর শহরের নজরুল ইসলামের কাছে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন স্বেচ্ছাসেবক দলের এই নেতা। নজরুল ইসলাম বিষয়টি জামালপুর সদর থানায় লিখিতভাবে জানালে, দ্রুত পদক্ষেপ নেয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। যৌথভাবে সেনাবাহিনী ও পুলিশের একটি দল শাহাপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে হাবিবুর রহমানকে চাঁদাবাজির টাকাসহ হাতেনাতে ধরে ফেলে।সদর থানার ওসি আবু ফয়সল মো. আতিক বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, “সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে আটক করা হয়েছে। বর্তমানে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।”
হাবিবুর রহমান স্থানীয় পর্যায়ে স্বেচ্ছাসেবক দলের একজন সক্রিয় সদস্য। প্রশ্ন হচ্ছে, রাজনৈতিক পরিচয় কি এখন অপরাধ ঢাকার ঢাল হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে?
এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গেলে দেখা যায়, স্থানীয় রাজনীতিতে পৃষ্ঠপোষকতার সংস্কৃতি ও নেতাদের দায়মুক্তির প্রবণতা কীভাবে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা বিঘ্নিত করছে।
যেখানে রাজনৈতিক কর্মীরা জনসেবার পরিবর্তে ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থ করতে চাঁদাবাজির মতো অপরাধে জড়িয়ে পড়ে, সেখানে রাজনৈতিক সংগঠনের ভাবমূর্তি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এই ঘটনাটি হয়তো বিচ্ছিন্ন, কিন্তু এটি বৃহৎ রাজনৈতিক সংস্কৃতির একটি ক্ষুদ্র প্রতিচ্ছবি।
স্থানীয় বাসিন্দারা এই ঘটনায় স্বস্তি প্রকাশ করেছেন। তাদের মতে, এ ধরনের অভিযানে সাধারণ মানুষ কিছুটা হলেও নিরাপত্তা বোধ করে। তবে শুধু একটি অভিযান যথেষ্ট নয়—প্রয়োজন ধারাবাহিক মনিটরিং, রাজনৈতিক পরিচয়ের ঊর্ধ্বে উঠে বিচার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি।
হাবিবুর রহমানের গ্রেপ্তারের ঘটনা স্বাভাবিক আইনি প্রক্রিয়ার অংশ হলেও এর রাজনৈতিক তাৎপর্য অত্যন্ত গভীর। এটি প্রমাণ করে, দলীয় পরিচয় দিয়ে অপরাধ ঢাকা যায় না—যদি প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিরপেক্ষ ও সক্রিয় থাকে।
এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের মধ্য দিয়েই প্রতিষ্ঠিত হতে পারে একটি শক্তিশালী বার্তা: বাংলাদেশে আইনের শাসন অগ্রাহ্য করার সুযোগ আর নেই।

 
                         
         
         
        